ঢাকা: বাজার সিন্ডিকেটের ছোবলে নিত্যপণ্যে বাজার বিশৃঙ্খল বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি জনাব হাসানুল হক ইনু।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে জাসদ কার্যালয়ে অবস্থিত শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে জাসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা শহীদ কাজী আরেফ আহমেদের ২৫তম হত্যাদিবস উপলক্ষে জাসদের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য প্রদান করেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড দিলীপ বড়ুয়া, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত রায়হান, রোকনুজ্জামান রোকন, নইমুল আহসান জুয়েল ও জাতীয় শ্রমিক জোট সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা।
সভাপতির ভাষণে হাসানুল হক ইনু প্রয়াত নেতা কাজী আরেফ আহমেদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, কাজী আরেফ আহমেদ একজন জাতীয় বীর, জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-স্বাধীনতা আন্দোলন-মুক্তি সংগ্রাম-মুক্তিযুদ্ধের অগ্রপথিক, একজন মহান সমাজতন্ত্রী। তিনি ছিলেন সামরিক শাসন ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির ঐক্যের দিশারি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্দোলনের অন্যতম নেতা।
দেশের সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাজার সিন্ডিকেটের ছোবলে নিত্যপণ্যে বাজার বিশৃঙ্খল। জনজীবন বিপর্যস্ত, ক্ষতবিক্ষত। বিদেশে টাকা পাচার, ব্যাংকের টাকা লুটপাট ও দুর্নীতি অর্থনীতির জন্য অভিশাপ। এ তিন অভিশাপে অর্থনীতিতে চলছে রক্তক্ষরণ। এ অবস্থায় জনগণকে স্বস্তি দিতে বাজার সিন্ডিকেট ধ্বংস ও অর্থনীতিকে গতিশীল করতে বিদেশে টাকা পাচার, ব্যাংকের টাকা লুটপাট ও দুর্নীতির অভিশাপ দূর করাই হচ্ছে এ মুহূর্তে সব চাইতে বড় অগ্রাধিকার।
জাসদ সভাপতি বলেন, সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী বিএনপি-জামাত চক্র এখনও বাংলাদেশ রাষ্ট্র, সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। এরা বদলায়নি, শোধরায়নি। বিএনপি-জামায়াত-জঙ্গিবাদী সাম্প্রদায়িক চক্র বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্থায়ী বিষফোঁড়ায় পরিণত হয়েছে। রাজনীতির এ বিষফোঁড়ার স্থায়ী সমাধান বের করার জন্য সব দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিকে গভীরভাবে চিন্তা করে জাতীয় রাজনৈতিক কর্তব্য সুনির্দিষ্ট করতে হবে।
ইনু জনগণকে স্বস্তি দিতে বাজার সিন্ডিকেটের ছোবল থেকে জনগণকে রক্ষা এবং সংঘাতের রাজনীতি অবসানে বিএনপি-জামাত এর বিষফোঁড়ার স্থায়ী সমাধানের পথও বের করতে হবে বলে তার বক্তব্যে বলেন।
দিলীপ বড়ুয়া তার ভাষণে বলেন, জঙ্গিবাদ মৌলবাদ সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে জনজাগরণ তৈরি করতে হবে। প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে এ অপশক্তি রুখা যাবে না। জনগণের মাঝে ১৪ দলের যে আবেদন আছে তাকে জনজাগরণে পরিণত করতে হবে।
১৯৯৮ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার কালিদাশপুরে জাসদ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী জনসভার মঞ্চে প্রকাশ্য দিবালোকে কুষ্টিয়া-চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের চিহ্নিত সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদীরা গুলি করে জাসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কাজী আরেফ আহমেদ কুষ্টিয়া জেলা কমিটির তৎকালীন সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা লোকমান হেসেন, সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা ইয়াকুব আলী, স্থানীয় জাসদ নেতা ইসরাইর হোসেন তপস ও সমসের মন্ডলকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় মিরপুর মাজার রোডে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন বীরমুক্তিযোদ্ধা কবরস্থানে প্রয়াত নেতা কাজী আরেফ আহমেদের সমাধিতে জাসদ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
Leave a Reply